সোমবার, ২৭ মে ২০২৪, ০৫:১০ পূর্বাহ্ন

চেক ডিজঅনার মামলায় অভিমত দিয়ে দেয়া হাইকোর্ট রায় স্থগিত

চেক ডিজঅনার মামলায় অভিমত দিয়ে দেয়া হাইকোর্ট রায় স্থগিত

স্বদেশ ডেস্ক:

চেক ডিজঅনার মামলায় কাউকে কারাগারে পাঠানো সংবিধান পরিপন্থী উল্লেখ করে হাইকোর্টের অভিমত দেয়া সংক্রান্ত রায়টি স্থগিত করেছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট।

রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে আপিল বিভাগে শুনানির জন্য আগামী ১৪ নভেম্বর দিনও ধার্য করা হয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

এ সংক্রান্ত কয়েকটি মামলা নিষ্পত্তির রায়ে গত ২৮ আগস্ট ওই অভিমত দিয়েছিলেন বিচারপতি মো: আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ। পরে ওই রায় স্থগিত চেয়ে আবেদন করার কথা জানান অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, কোনো ব্যক্তিকে তার ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের লঙ্ঘন। আর নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট (এনআই) অ্যাক্ট, ১৯৮১-এর ১৩৮ ধারায় চেক ডিজঅনার মামলায় ব্যক্তিকে কারাগারে বন্দী রাখা ব্যক্তির স্বাধীনতা হরণের শামিল।

আইনজীবীরা জানান, এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ ধারা সংশোধনের জন্য জাতীয় সংসদকে পরামর্শ দেয়ার পাশাপাশি অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট। সেখানে বলেছেন, এনআই অ্যাক্টের মামলায় বিশেষ করে চেক ডিজঅনারের মামলায় কাউকে জেলে পাঠানো সংবিধান পরিপন্থী। আদালত ধারাটি সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত এসব মামলা নিষ্পত্তিতে একটি নীতিমালা করে দিয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ রায়ে সেটি থাকবে বলেও জানিয়েছেন আদালত।

আদালত রায়ে বলেছেন, চেক ডিজঅনার মামলায় ব্যক্তিকে জেলে পাঠানো ইন্টারন্যাশনাল কভিনেন্ট অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস চুক্তির ১১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। বাংলাদেশ এ চুক্তিতে সইকারী দেশ।

সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের চেক ডিজঅনার মামলার উদাহরণ দিয়ে আদালত বলেন, এসব দেশে এ মামলায় ব্যক্তিকে জেলে পাঠানোর বিধান নেই। এসব দেশে চেক ডিজঅনার মামলাকে দেওয়ানি প্রকৃতির মামলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৮১ সালের এ আইনটি (বাংলাদেশ নেগোসিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট অ্যাক্ট) ১৯৯৪ সালে দণ্ডবিধিতে সংযোজনের মাধ্যমে আধা-ফৌজদারি হিসেবে পরিণত করা হয়েছে।

হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে আরো বলেন, চুক্তি শর্ত পূরণে ব্যর্থতার জন্য কোনো ব্যক্তিকে কারাগারে বন্দী রাখা যাবে না। চুক্তির শর্ত পূরণে ব্যর্থতার জন্য যদি ব্যক্তিকে কারাগারে পাঠানো হয় তাহলে অচিরেই বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ কারাগারে চলে যাবে। নিশ্চয়ই এমনটা কারো কাম্য নয়। তাই আদালত মনে করেন, আইনটির ১৩৮ ধারা দ্রুত সংশোধন করে কারাগারে পাঠানোর বিধান বাতিল করা দরকার। জাতীয় সংসদ দ্রুত এ ধারা সংশোধন করবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন আদালত।

এখন হাইকোর্টের এ রায় স্থগিত করলো আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট।

সূত্র : বাসস

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877